ভ্রমণ শারদীয়া ১৪৩২ এখন প্রকাশিত। পড়ুন বিশ্বজোড়া ভ্রমণকাহিনি, ইতিহাস, প্রকৃতি ও সংস্কৃতির অনন্য মিশ্রণ। সংবাদপত্র বিক্রেতা ও পত্রিকাস্টলে এখনই সংগ্রহ করুন।

🌸 শারদীয়া সংখ্যার বিশেষত্ব
শারদীয়া মানেই নতুন আনন্দ, নতুন আবিষ্কার, আর নতুন গল্প। এবারের ভ্রমণ শারদীয়া ১৪৩২ সংখ্যা পাঠককে নিয়ে যাবে পৃথিবীর নানা প্রান্তে—আন্দিয়ান মরুভূমি থেকে কিলিমাঞ্জারোর শীর্ষে, মাদাগাস্কারের বর্ষাবন থেকে ব্যাবিলনের ইতিহাসের গভীরে।
এটি শুধু একটি Bengali Travel Magazine নয়, বরং এক অনন্য ভ্রমণ সঙ্গী।
Evolving together
Highlight your history, showcase growth and key milestones.
খো শি পাই
খো মানে বছর, শি মানে নতুন আর পাই মানে উৎসব। অর্থাৎ নতুন বছরের উৎসব! অরুণাচল প্রদেশের লিসু জনজাতির বাৎসরিক উৎসব, খো শি পাই দেখতে হলে যেতে হবে চাং লাং জেলার বিজয়নগরের কাছে গান্ধীগ্রামে।

পৃথিবীর ছাদে সুমেরু বিন্দু
কলকাতা বিমানবন্দরের রানওয়ে ভেসে যাচ্ছে জ্যোৎস্নায়। ২৮ জুনের মধ্যরাত। দীর্ঘ যাত্রার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে বেরিয়েছি। প্রথম দফায় কলকাতা থেকে যাব দিল্লি। দ্বিতীয় দফায় দিল্লি থেকে একটানা উড়ে নরওয়ের রাজধানী অসলো। তৃতীয় দফায় অসলো থেকে উত্তর-মেরুর গেটওয়ে লংইয়ারবেন।

পশ্চিম পাপুয়ায় শান্ত হাঙরের সঙ্গে সাঁতার
গরুড় এয়ারলাইন্সের ছোট বিমান ভারত মহাসাগর, পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর এবং নানা সাগর-উপসাগর পার হয়ে তিন ঘণ্টা পর সোরংয়ে নামল। দক্ষিণ-পশ্চিম পাপুয়ার রাজধানী সোরং, এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও জনবহুল শহর। বিমানবন্দরের কাছেই ভেগা হোটেলে গিয়ে উঠলাম। বেশ ভালো হোটেল, বুফেতে হরেক রকম খাবার আর দামও বেশ কম।

মোঙ্গোল রাজ্যে
বেজিং বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের বাধা পার করে জানতে পারলাম, এয়ার চায়নার ফ্লাইট কিছুটা দেরিতে এসে পৌঁছেছে। অতএব ছেড়েও যাবে কিছুটা দেরিতে। শেষ বার চিন ভ্রমণ করেছি ২০১৫ সালে। তারপর সেমুখো হইনি। ২০২৫-এ এসে পরিস্থিতিও কিছুটা অন্য রকম।

আম্বোলির অন্দরে
মাত্র দু'দিন আগে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় প্রায় সমস্ত যাত্রী মারা যাওয়ার কারণে মনের মধ্যে আশঙ্কার যে-কাঁটাটা খচখচ করছিল, নর্থ গোয়া এয়ারপোর্টে আমাদের এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটির সফল অবতরণে তা মিলিয়ে গেল।

কাজাখস্তানের মাঙ্গিস্তাউ
হপ্তাখানেক কাজাখস্তানের চোখজুড়ানো সবুজ স্তেপ তৃণভূমিতে ঘুরে বেড়িয়ে মাঙ্গিস্তাউ প্রদেশের রাজধানী আকতাউতে এসে মনটা দমে গেল। কাজাখস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমে কাস্পিয়ান সাগরের উপকূলবর্তী এই শহরে সবুজের ছোঁয়া বড়ই কম। তার উপর মেঘলা আকাশ চারপাশের বিবর্ণতা যেন আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে
প্রশান্ত মহাসাগরের অনন্ত জলরাশি ধরে দূরে একগুচ্ছ দ্বীপভূমির দিকে এগোচ্ছে এইচএমএস বিগল নামে একটি জাহাজ। জাহাজের যাত্রী চার্লস ডারউইন নামে এক ভদ্রলোক। দিনটা ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর। জাহাজ ভিড়ল তীরে। ডারউইন চারপাশে তাকাতে তাকাতে নেমে এলেন দ্বীপে।

নেপালের আপার মুস্তাং
পশ্চিম তিব্বতের এক জন যোদ্ধা, আমে পাল, আপার মুস্তাং বা লো রাজ্যের রাজধানী হিসেবে লো মান্থাং উপত্যকায় একটি প্রাচীরবেষ্টিত স্বয়ংসম্পূর্ণ শহর তৈরি করেন। সেটা ১৩৮০ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৯২ সাল পর্যন্ত বহির্বিশ্বের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছিল এই শহরটি। এ কারণে একে বলা হত 'হিডেন কিংডম' বা 'ফরবিডেন কিংডম'।

ছবি: নির্মাল্য চক্রবর্তী
হাওয়াই দ্বীপে কয়েকদিন
ভোর তখন সাড়ে পাঁচটা। ভলক্যানো হাউসের পিছন দিকে এসে বড় পাঁচিলটার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। দূরের কালো কুচকুচে পাহাড়টায় দৃষ্টি নিবদ্ধ। সেখান থেকে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে আগুনের গোলা। হঠাৎ হঠাৎ তার তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে। রাশি রাশি সাদা ধোঁয়া উপরের দিকে উঠে চলেছে অবিরত। খুব কান খাড়া করে শুনলে বোঝা যায়, একটা ক্ষীণ চরচর চরচর শব্দও হচ্ছে।

কিলিমাঞ্জারোর পায়ের কাছে মাসাইমারা অভিযান
'অ্যাম্বোসেলিতে যাচ্ছ? পথে মাসাইমারা, লেক নাকুরু আর নৈভাসা ঘুরে যেও। এখানকার জঙ্গল কখনও পুরনো হয় না।' বলেছিল আমাজন অ্যাডভেঞ্চার্স সংস্থার জিম ম্যাকড্যানিয়েল। তারপর আমাদের জুড়ে দিয়েছিল আফ্রিকার পলম্যানস ট্যুরস অ্যান্ড সাফারিজের সঙ্গে। সেপ্টেম্বরের শেষ এখন, মনে ক্ষীণ আশা ছিল, মাসাইমারায় মাইগ্রেশন দেখাও হয়তো জুটে যেতে পারে কপালে।

কিলিমাঞ্জারো শীর্ষে অভিযান
সোয়াহিলি শব্দ 'কিলিমা', চাপ্পা শব্দ 'নজারো'। 'পাহাড়'। কিলিমার অর্থ নজারোর অর্থ 'শুভ্রতা'। দু'য়ে মিলে যে-কিলিমাঞ্জারো পাহাড়, তার শীর্ষ সত্যিই শুভ্র তুষারে ঢাকা। আফ্রিকার উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ, মাউন্ট কিলিমাঞ্জারোকে (উচ্চতা ১৯,৩৪০ ফুট) পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী চাপ্পা, সোয়াহিলি এবং মাসাই উপজাতির লোকজন 'ঈশ্বরের আসন' মনে করে।

বান্ধবগড়ে পাখির খোঁজে
বান্ধবগড় নামটা শুনলে প্রথমেই চোখের সামনে যে-ছবি ভেসে ওঠে, সেটি বাঘের। বার দুই বান্ধবগড়ে গিয়ে দলের বাকিদের উৎসাহে বেশিটাই বাঘের খোঁজে ঘুরেছিলাম। পাখি খোঁজার সুযোগ বিশেষ ছিল না। যদিও সাফারির গাড়ি থেকেই পাখির যে-বৈচিত্র বান্ধবগড়ে চোখে পড়েছিল, তাতেই মনে মনে ভেবে রেখেছিলাম, সুযোগ পেলে বান্ধবগড়ে বাঘের ডেরায় কেবল পাখি দেখার জন্যই আসব।

ডানাকিল
পূর্ব ইথিওপিয়ার আফার মরুভূমিতে ঝড়ে পড়লাম। মরুভূমির ঝড় সম্পর্কে ধারণা ছিল না। এই দুর্গম, জনমানবহীন অঞ্চলে সাধারণত এক জন ট্যুরিস্টকে গাইডের সঙ্গে পাঠায় না কোনও ট্যুর কোম্পানি। ১৪-১৫ জন ট্যুরিস্ট, পাঁচ-ছ'টা জিপ, গাইড, ড্রাইভার, কুক নিয়ে মোট ২০-২২ জনের এক-একটা দল যায়। আমার পর্যটন সংস্থা অন্য একটি সংস্থার সঙ্গে মিলে এবারের ভ্রমণের আয়োজন করেছে।

মাদাগাস্কারের বর্ষাবনে
প্রথমে ভারত-পাক যুদ্ধের আবহে ছুটি বাতিল, তারপর কেনিয়া এয়ারওয়েজ ও এয়ার মাদাগাস্কারের পাল্লা দিয়ে ফ্লাইট রিশিডিউলিং এবং সব শেষে ঠিক যাত্রারম্ভের সময় বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে জোড়া নিম্নচাপের সাঁড়াশি আক্রমণে বিমান বাতিলের ভয়।

পাট্টানকোডলির ভান্ডারা উৎসবে
কলকাতা থেকে সন্ধের বিমানে পুনে পৌঁছে সেখান থেকে প্রায় মাঝরাতের ট্রেন ধরে কাকভোরে নামলাম ক মহারাষ্ট্রের কোলাপুর শহরে। স্টেশন থেকে পূর্বনির্ধারিত হোটেল, অটোরিকশায় মিনিট পনেরোর রাস্তা। এবার ছুটি অল্প দিনের। তাই হোটেলে পৌঁছে একেবারে স্নান সেরে বেরিয়ে পড়লাম। কাছেই মহালক্ষ্মী বা অম্বাবাই মন্দির। হোটেল থেকে মিনিট দশেকের আটোরিকশা যাত্রা।

মরু-সৈকত হুরঘাদা
লা ক্সর থেকে সকাল সকাল বেরলাম। সঙ্গে গাইড মেধাত আবদিন। এ ছাড়া রয়েছে গাড়ির চালক স্যামুয়েল ওরফে স্যাম। ডেনডারা দেখে এখন চলেছি মিশরের মরু-সৈকত হুরঘাদার পথে। ডেনডারা থেকে দূরত্ব ২৩৬ কিলোমিটার। দু'ধারে রুক্ষ পাহাড়ের প্রাচীর। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা চলার পর কিছু আধুনিক ঘরবাড়ি দেখা গেল। বুঝলাম, হুরঘাদা আর বেশি দূরে নয়।'

ইরান এ জিবা
আমাদের নিশান এসইউভি গাড়ি তেহরান ছেড়ে এগিয়ে চলেছে কাশানের দিকে। কাশান, ইস্ফাহান প্রদেশে। ইরানে মোট ৩১টি প্রদেশ বা ওস্তানাহ আছে। আমরা চলেছি মধ্য ইরানের পথে। জানলার বাইরে এক উদাস মরুভূমি।

বহু যুগের ওপার থেকে ব্যাবিলন
ছোটবেলা থেকে পড়ে ও জেনে আসা পৃথিবীর সাতটি আশ্চর্য বস্তুর মধ্যে ব্যাবিলনের ঝুলন্ত বাগান নিয়ে রোমাঞ্চিত ছিলাম সবচেয়ে বেশি। সে কি শূন্যে ভাসমান? সেই বাগানের ভিতর দিয়ে বুঝি মেঘ ভেসে বেড়ায়, বাগান থেকে ঝরনার জল গড়িয়ে পৃথিবীতে পড়ে, পরীরা খেলে বেড়ায়! এমনই নানান স্বপ্ন ও কল্পনা ছিল!

কাপাদোকিয়ার গুহাস্তম্ভ
তুরস্কের কাপাদোকিয়ায় এসে, দূর থেকে পাহাড়ের গায়ে মৌচাকের খোপের অমতো অন্ধকার গুহামুখগুলিকে দেখে দক্ষিণ ইতালির বারিতে দেখা 'সাসি ডি মাতেরা' অর্থাৎ মাতেরার পাথরের কথা মনে পড়ে গেল। ইতালীয় ভাষায় 'সাসি' শব্দের অর্থ পাথর।

হার-না-মানা পর্বত অভিযান
অনেক স্বপ্ন, পরিকল্পনা আর অর্থ খরচ করার পরও অভিযান যে মুহূর্তের মধ্যে বিফল হয়ে যাবে, কেউ তা কল্পনাও করিনি।
যে-কোনও শৃঙ্গে আরোহণ করতেই অনেকটা প্রস্তুতি লাগে। শৃঙ্গ সম্বন্ধে পড়াশোনা, অভিযানের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম জোগাড়, দক্ষ শেরপার সঙ্গে যোগাযোগ, দিন হিসাব করে জ্বালানি ও খাবারের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব কষা,

ইংল্যান্ডের লেক ডিস্ট্রিক্ট
ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের নানা প্রান্তে কয়েক দিন ঘুরে বেড়িয়ে চললাম কার্ডিফ। ব্রিস্টল থেকে কার্ডিফ প্রায় ৬৮ কিলোমিটারের অসাধারণ এক যাত্রাপথ! বাস ছুটেছে মসৃণ রাজপথ ধরে, মোলায়েম শীতমাখা, রোদঝলমলে এক বসন্তের সকালে। প্রকৃতি এখন সবুজ। চারপাশে ফুটে রয়েছে মরশুমি ফুল। কোথাও তা ফুটেছে আপন খেয়ালে, আবার কোথাও সযত্নে লালিত। দিগন্তে ঢেউখেলানো নাতিউচ্চ পাহাড়শ্রেণি। দুরন্ত গতিতে পেরিয়ে চললাম গ্রামগঞ্জ।

গ্রীষ্মে লাদাখে
ছবি: ভাস্বরণ ভট্টাচার্য
বছর দুই আগের এক জুন মাস। কলকাতা থেকে আকাশপথে শ্রীনগরে এসে, দু'দিন শ্রীনগরে থেকে, কার্গিল শহরের দিকে এগিয়ে চলেছি। দূরত্ব ২০৪ কিলোমিটার। চমৎকার আবহাওয়া। মসৃণ পথ ধরে গাড়ি চলেছে। পথে চোখে পড়ল নাগিন লেক, হরি পর্বতের উপর পুরনো কেল্লা, হজরতবাল মসজিদ, কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া গৃহস্থ বাড়ি, বাড়ির বাগানে প্রচুর ফলন্ত আপেল গাছ।

গ্রিসের দ্বীপ জান্তে
উত্তর-পশ্চিম দিকে সুউচ্চ পর্বতমালা, মধ্যভাগে বিস্তৃত উপত্যকার যেদিকে চোখ যায় শুধু অলিভ গাছের অরণ্য, সমুদ্র এমন স্বচ্ছ যে ভিতরটা অবধি স্পষ্ট দেখা যায়। সমুদ্রের নীল এত রকম হতে পারে, তা যেন প্রথম বার দেখলাম।
ভোররাতে উড়ে সকাল সকাল পৌঁছলাম আয়োনিয়ান সমুদ্রের উপর, জান্তে শহরের বিমানবন্দরে। প্লেন ল্যান্ড করতেই যাত্রীরা হাততালি দিয়ে উঠলেন। এরকম প্রান্তিক দ্বীপে সফল ভাবে বিমান নামানো নিশ্চয়ই পাইলটের দক্ষতার পরিচয়!
